OrdinaryITPostAd

হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায় সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন

 

প্রিয়জনের, কাছের মানুষের হঠাত্ হার্ট অ্যাটাক হলে অনেকেরই মাথা কাজ করে না। অথচ এই সময়ই মাথা ঠান্ডা রাখা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ঠান্ডা মাথায় রোগীকে যতটা ফার্স্ট এড দিতে পারবেন ঝুঁকি তত কমবে। এই সময় ঘাবড়ে গিয়ে দেরি করে ফেললে কিন্তু বিপদ আরও বাড়বে। জেনে নিন কী করবেন জরুরি সময়ে।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়
শুধু বেশি বয়সীদের হার্টের সমস্যা হয় তা কিন্তু নয়। এখন কম বয়সীদের মধ্যেও এ রোগ হচ্ছে। মূলত অনিয়মিত জীবনযাপনকেই চিকিৎসকরা এর কারণ হিসেবে দায়ী করছেন। তবে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কিছুটা পরিবর্তন আনলেই হার্ট অনেকটা সুস্থ রাখা সম্ভব।

ভূমিকা

হৃদরোগের জন্য কোলেস্টেরলের চেয়েও প্রদাহ অনেক বেশি দায়ী। অনেকে বিশ্বাস করেন যে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডই তাদের হার্ট অ্যাটাকের পিছনে একমাত্র কারণ। বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকের পিছনে প্রধান কারণ হল হৃদযন্ত্রে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ ক্ষতি। রক্তনালী, এন্ডোথেলিয়াল আস্তরণ, ধমনী এবং আরও অনেক কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেও অনেক হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটে থাকে। স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই কিন্তু কেবল কোলেস্টেরলের মাত্রাই যে হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী, তা একেবারেই ঠিক কথা নয়।

হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়

জীবনযাত্রায় কী কী পরিবর্তন আনলে হার্ট সুস্থ রাখা সম্ভব সময় সংবাদের পাঠকদের জন্য তা নিচে তুলে ধরা হলো।

পর্যাপ্ত ঘুম দরকার
দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুম সুস্থ থাকার জন্য খুব জরুরি। মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকাও খুব দরকার। নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে রাতের ঘুম ভালো হয়। রক্তকণিকা সুস্থ থাকে।

রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখা দরকার
শরীরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা থাকলে তা কখনও ভালো নয়। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা এমনিই কমে যায়।

নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে হার্ট সুস্থ থাকে। নিয়মিত আধা ঘণ্টা হাঁটতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন শরীরচর্চা করতে হবে।

মদপান এবং ধূমপান থেকে দূরে থাকুন
ধূমপান ও মদপান একেবারে ছেড়ে দিতে হবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে
আপনার প্রতিদিনের খাবারে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আর ফ্যাটের পরিমাণে যেন সমতা থাকে। সতেজ ফল, শাকসবজি খান। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এমন মাছ রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখুন। লবণ, মিষ্টি, রেড মিট খাওয়া কমান।

হার্ট ভালো আছে বুঝার উপায়

একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য স্বাভাবিক বিশ্রামের কারণে হার্টের রেট থাকা উচিত প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ মাত্রা। আমেরিকার মায়ো ক্লিনিকের গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে প্রতি মিনিটে হার্ট রেট বা পালস রেট ৪০-এর কম হতে পারে। এই মাত্রায় হার্ট রেট থাকলে তাকে সুস্থ হৃত্‍‌পিণ্ড বলে ব্যাখ্যা করে হয়ে থাকে। ডাক্তারির ভাষায় তাকে কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস বলে। কিন্তু হার্ট রেটের হেরফের কবলেই বুঝবেন আপনার হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

হার্টের সমস্যা বোঝার উপায়

হার্টের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই অসুখ যে কোনও সময় জীবন নিয়ে টানাটানি করতে পারে। তাই এই রোগকে প্রথমেই চিহ্নিত করা সবথেকে জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর হার্টের রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান প্রায় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ মানুষ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী তাই সচেতন থাকুন। ভুলেও অবহেলা করবেন না, জেনে নিন হার্ট অ্যাটাকের ৮টি লক্ষণ:
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-1
বুকে ব্যথা: সাধারণত বুকের মাঝখানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। আস্তে আস্তে সেই ব্যথা চোয়ালে অথবা বাম কাঁধ ও হাতে ছড়িয়ে পড়ে থাকে। এই রকম ব্যথা দেখা দিলে অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-2
শ্বাসকষ্ট ও দম ফুরিয়ে যাওয়া: যদি আপনার শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনও সমস্যা না থাকে এবং হঠাৎ করে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তবে সেটা খারাপ লক্ষণ। মূলত হৃদরোগ থেকে ফুসফুসে জল জমা-সহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঠান্ডা ছাড়াও শ্বাস কষ্ট এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়া, মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-3
অতিরিক্ত ঘাম হওয়া: অতিরিক্ত ঘাম হওয়া হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত ঘাম, বুক ধড়ফড়, হঠাৎ শরীর খারাপ লাগতে শুরু করলে অব্যশই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-4
কাশি: আপনার যদি দীর্ঘ দিন কাশির সমস্যা থাকে, এবং তার সঙ্গে সাদা বা কিছুটা ঘোলাটে কফ বের হয়। তবে বুঝতে হবে আপনার হার্ট ঠিক মতো কাজ করছে না। ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হ্যাঁ, কাশি সব সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নাও হতে পারে। কফের সঙ্গে নিয়মিত রক্ত বের হলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-5
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া: যদি কাজ করার মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তা হলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-6
তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়া: আপনি কি অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন? কিছু ক্ষণ কাজ করলে বুক ধড়ফড় করে? তবে আপনি এখনই কোনও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষ করে মহিলাদের হার্টের সমস্যার প্রধান লক্ষণ এটি।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-7
মাথা ব্যথা: যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জানেন কি, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হল প্রতিদিনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা?
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়-8
অনিয়মিত পালস রেট: আপনি যদি অনেক বেশি নার্ভাস থাকেন বা কোথাও থেকে দৌড়ে আসেন আপনার পালস রেট ওঠা-নামা করতে পারে। তবে এটি যখন কোনও কারণ ছাড়াই হয়, তবে তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। হার্ট অ্যাটাকের আগে এমনটা হয়ে থাকে।

হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার দিকে নজর দিলেই দেখা যাবে, এমন কিছু খাবার খেয়ে থাকি আমরা, যা হার্টের জন্য একেবারেই ভাল নয়। প্রতিদিন এসব খাবারে অভ্যস্ত হতে হতে অজান্তেই হার্টের ক্ষতি করে চলেছি আমরা। দেখে নিন চিকিৎসকদের মতে সাডেন হার্ট অ্যাটাক রুখতে ও হার্টকে সুস্থ রাখতে কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না।
ঠান্ডা পানীয়: তৃষ্ণার্ত হলেই বা নিছক শখেও বোতল বোতল ঠান্ডা পানীয় খেয়ে চলেন? এ বার সাবধান হোন। কোল্ড ড্রিঙ্কের অতিরিক্ত সুগার ও সোডা ধমনীর উপর চাপ ফেলে। এ ছাড়াও শরীরে জলের পরিমাণ কমিয়ে ভিতর থেকে শুকনো করে দেয় এই সব পানীয়।

চিপ্‌স: শিশু থেকে প্রৌঢ়, চিপ্‌স পছন্দ করেন অনেকেই। মাঝে মাঝে কয়েক টুকরো চিপ্‌সে অতটা সমস্যা হয় না, কিন্তু চিপ্‌স খাওয়া অভ্যাসে পরিণত হলে তা থেকেই হানা দেবে হার্টের বিপত্তি। চিপ্‌সের ট্রান্স ফ্যাট ও অতিরিক্ত নুন হার্টের উপর চাপ দেয়। দিনের পর দিন শরীরে জমতে থাকা অতিরিক্ত সোডিয়াম ডেকে আনে হার্ট অ্যাটাককে।

জাঙ্ক ফুড: পিৎজা, বার্গার-সহ চাইনিজ খাবারে রাশ টানুন। নানা চাইনিজ সসে প্রিজারভেটিভের পরিমাণ এতটাই যে তা থেকে শরীরের নানা ক্ষতি হয়। বাদ পড়ে না হার্টও। পিৎজা-বার্গারের সোডিয়াম ও অতিরিক্ত ফ্যাট ওবেসিটি বাড়িয়ে হার্টের উপর চাপ ফেলে।এ ছাড়া জাঙ্ক ফুডে ব্যবহৃত তেলও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

প্রক্রিয়াজাত মাছ-মাংস: যে কোনও প্রক্রিয়াজাত খাবারেই নুন ও চিনির মাত্রা অনেক বেশি থাকে। সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয় নানা রাসায়নিকও। এগুলির কোনওটাই হার্টের জন্য ভাল নয়। কেবল ওবেসিটিই নয়, সাডেন হার্ট অ্যাটাকের পিছনেও এমন কিছু খাদ্যাভ্যাস দায়ী। এ সব খাবারে হৃদযন্ত্র দুর্বল হয় সহজে।

কফি: যখন তখন কফি খান? তা হলে এই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করুন আজই। ব্লেন্ডেড কফিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি এবং ফ্যাট জাতীয় উপাদান থাকে। এ ছাড়া কফির ক্যাফিন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে হার্টকে বিপদে ফেলে।

হার্টের সমস্যা সমাধানের উপায়

পরিমিত খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ না নেওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ আর ধূমপান না করা—দৈনন্দিন জীবনে এ কয়টি অভ্যাস আপনার হৃৎপিণ্ডকে রাখবে সুস্থ-সবল। দেখে মনে হতে পারে, আরে এসব মেনে চলা তো বাঁ হাতের খেল! আসলে কিন্তু তা নয়, মানে ব্যাপারটা এত সহজ নয়।
রোজকার জীবনে নতুন কোনো কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যেখানে কঠিন ব্যাপার, সেখানে একসঙ্গে এতগুলো অভ্যাসের পরিবর্তন করা চাট্টিখানি কথা নয়। তবে সমস্যা হলে সমাধান থাকবেই। দৈনন্দিন জীবনে নানা কৌশলে আপনি এসব অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন খুব সহজেই। আসুন জেনে নিই এভাবে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখার সহজ ছয়টি উপায়:

খেলার ছলে ব্যায়াম
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন বড়দের। কিন্তু ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে হুট করে শারীরিক কসরতের মাধ্যমে ঘাম ঝরানো ভীষণ ক্লান্তিকর ব্যাপার। এ কারণে বাসায় বাচ্চাকাচ্চা থাকলে তাঁদের সঙ্গে খেলার মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের কাজটা সেরে নিতে পারেন। সেটা হতে পারে কায়িক পরিশ্রমের যেকোনো খেলা।
বাচ্চাকাচ্চা না থাকলেও সমস্যা নেই। একটু হাঁটা কিংবা সাংসারিক কাজের মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের রুটিন সেরে নিতে পারেন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম মানে যে টানা আধঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে, সেটা কিন্তু নয়। এ সময়টাকে ভেঙে নিতে পারেন। সকালে ১০ মিনিট ঘাম ঝরালেন, দুপুরে অফিসে মধ্যাহ্নবিরতির সময় ১০ মিনিট হেঁটে খেতে গেলেন, অফিস থেকে ফেরার পর বিকেলে কিংবা রাতে এ রকম আরও কিছু কাজ দিয়ে ব্যায়াম সেরে নিতে পারেন।

খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো
আপনি প্রাণীজ উৎস থেকে প্রাপ্ত ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ (ক্ষতিসাধক স্নেহ পদার্থ) খেতে ভালোবাসেন। যেমন ধরুন, ‘রেড মিট’ কিংবা পূর্ণমাত্রায় ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি। হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে এসব খাবার ছাড়তে হবে। কিন্তু ছাড়বেন কীভাবে? আপনি তো বদভ্যাসের দাস! ভাববেন না, উপায় আছে। অভ্যাসটা ধীরে ধীরে পাল্টান। ‘রেড মিড’-এর মেন্যুতে ধীরে ধীরে ‘লো-ফ্যাট মিট’ যোগ করুন। দুগ্ধজাত খাবারের পরিবর্তে জলপাই কিংবা ‘ক্যানোলা অয়েল’ খেতে পারেন। খাবারে লবণের পরিমাণ কমান। প্রক্রিয়াজাত কিংবা প্যাকেটজাত খাবার কম খান। প্রতিদিনের খাবারে ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাবেন না।
ভালো করে রান্না করলে শাকসবজি খেতে কিন্তু দারুণ লাগে। শাকসবজি খান প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কাপ, সঙ্গে থাকুক ফলমূল। শস্যদানা বা ‘গ্রেইন’যুক্ত খাবার খেতে পারেন, যেমন বাদামি চাল, বার্লি, পপকর্ন, ওটমিল, গমের রুটি, গমের প্যানকেক ইত্যাদি।

বিশ্রাম নিন
দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে পরিমিত বিশ্রাম নিন। মানে, স্রেফ কিছুই করবেন না, কোনো চাপ নেওয়ার দরকার নেই। পূর্ণমাত্রায় বিশ্রাম হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। যুক্তরাষ্ট্রের ‘একাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াবেটিস’-এর চিকিৎসক সুসান মুরের ভাষ্য, হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় মানসিক চাপ ‘খলনায়ক’-এর ভূমিকা পালন করে। গোটা স্বাস্থ্যের ওপরই এটা মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
আর তাই মাঝেমধ্যে কাজ ফেলে উঠে দাঁড়ান। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করুন। সাংসারিক কিংবা অফিসের কাজ ভুলে যান। স্রেফ নিজের জন্য বিশ্রাম নিন। সেটা শুয়ে-বসে যেকোনোভাবে। বিশ্রাম নেওয়ার পর দেখবেন ভীষণ ফুরফুরে লাগছে। মানে, ওই বিশ্রামের সময়টুকু আপনাকে কাজের জন্য উজ্জীবিত করে তুলবে।

ওজন  নিয়ন্ত্রন করা
স্থূলকায় মানুষের ওজন নিয়ে দুর্ভাবনার শেষ নেই। ওজন কমাতে ক্যালরির হিসাব করছেন, ব্যায়াম করছেন কিন্তু তারপরও কমছে না কিছুতেই। একটু মাথা খাটান। আপনি কি স্বাস্থ্যকর খাবার খাচ্ছেন? স্বাস্থ্যকর খাবার আর ক্যালরিযুক্ত খাবার কিন্তু এক নয়। পুষ্টিকর খাবার খান এবং ক্যালরি খরচ ও গ্রহণে ভারসাম্য আনুন। তরল খাবার খেতে পারেন। শাকসবজি থাকুক প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বাধ্যতামূলক করুন। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। বাসা থেকে বের হয়েই রিকশা না নিয়ে হেঁটে কিছুটা পথ এগোন। বাসায় ফেরার পথেও একই কৌশল অনুসরণ করুন।

ধূমপান ছাড়ার চ্যালেঞ্জ জিতুন
ধূমপানের অপকারিতা সমন্ধে আমরা সবাই জানি। এ বদভ্যাসটি ছাড়ার নির্দিষ্ট কোনো পথ নেই। যে যার মতো করে চেষ্টা করে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ, পরিবারের সাহায্য কিংবা এ দুটি ব্যাপার মিলিয়ে চেষ্টা করলে সুফল পেতে পারেন। ধূমপানের অপকারী দিকগুলো নিয়ে ভাবুন। এটা ছাড়ার উপকারী দিকগুলোতে মনোযোগী হতে পারেন। ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করাই শ্রেয়। মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। এটা ধূমপানে আপনাকে আরও আকৃষ্ট করবে। শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে ধূমপানের ইচ্ছা কমে যেতে পারে। কর্মচাঞ্চল্যের মধ্যে থাকলেও সুফল পেতে পারেন।

ইতিবাচক মনোভাব ও চাপ কমান
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে মানসিক প্রশান্তির বিকল্প নেই। কিন্তু কর্মক্ষেত্র, সমাজ কিংবা পরিবার থেকে মানুষ নানাভাবে চাপে থাকে। এসব চাপ যেমন মোকাবিলা করতে হবে, তেমনি বুদ্ধি করে কমাতেও হবে। প্রতিদিনের কাজের চাপ শেষে নিজের জন্য আলাদা করে একটু সময় বের করুন। পছন্দের গান শুনতে পারেন কিংবা বই পড়তে পারেন। কোনো কারণে মনে কষ্ট পেলে তা বন্ধু কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগ করে নিন। মনে কষ্ট পুষে রাখবেন না। এ ধরনের অভ্যাস হৃদ্‌রোগ ডেকে আনে। সবচেয়ে ভালো হয় পরিবার কিংবা কর্মক্ষেত্রে চমৎকার সামাজিক বন্ধন গড়ে তোলা।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯৮০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ একাকিত্ব বোধ করেন এখনকার মানুষ। অর্থাৎ ১৯৮০ সালে এ হার ছিল ২০ শতাংশ, এখন ৪০ শতাংশ। একাকিত্ব শুধু মানসিক ক্ষতি করে না, শারীরিক ক্ষতিও করে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, কেউ যখন কারও সঙ্গে কথা বলে, তখন হরমোন নিঃসরণের মাধ্যমে মস্তিষ্ক হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। এতে হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রম দারুণ সচল হয়ে ওঠে। অর্থাৎ হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে মানসিক চাপ কমানো এবং চারপাশের মানুষের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক গড়ে তোলাও জরুরি।

হার্ট ভালো রাখার ঘরোয়া উপায়

‘হার্ট’ ভালো রাখার খুবই সহজ উপায় রয়েছে। মাত্র কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই ভালো থাকবে হার্ট। আর সেই সকল নিয়মনীতি মেনে চলাই হচ্ছে মূল কাজ। সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না করা, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত চাপ নেওয়া ইত্যাদি সব কারণে হৃদপিণ্ডের সমস্যা হয়ে থাকে। মূলত জীবন পরিচালনার কারণেই হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে। এবার তাহলে ঘরোয়া উপায়ে হার্ট ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আপনার যদি হার্টে এনজিওপ্ল্যাস্টি বা স্টেন্ট বসানো থাকে তাহলে নতুন করে হার্টের যত্ন নিতে হবে। কেননা এই সময় হার্ট আরও সংবেদনশীল আচরণ করতে পারে। তবে চাইলে ঘরোয়া খাবার খেয়েই সুস্থ রাখা যায় হার্ট। একারণে বেশ কয়েকটি ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। অপারেশনের পর দ্রুত ক্ষত স্থান সারিয়ে তুলার জন্য, ইনফেকশনের সম্ভাবনা কমাতে এবং এনার্জি বজায় রাখতে অতিরিক্ত তেলমশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
কার্বোহাইড্রেটস, ভিটামিন, ফাইবার, মিনারেল ও প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এনজিওপ্লাস্টির পর ডায়েট প্ল্যানে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। এর থেকেও বড় বিষয় হচ্ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হবে। তাই হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য ডায়েটে সেদ্ধ চাল, আটা, ওটস রাখতে হবে। এসব খাবার শরীরে কার্বোহাইড্রেটসের ঘাটতি কমিয়ে আনতে পারে। এছাড়াও ডায়েটে নিয়মিত লেটুস ও মটরশুঁটি রাখার চেষ্টা করুন।

রান্নায় খাবার তেল হিসেবে সরিষার তেল, সয়াবিন ও অলিভ ওয়েল অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন। খাবারে সালাদ ও ডাল এবং কাজু বাদাম অল্প পরিমাণে রাখতে পারলে ভালো। এছাড়াও সকালের নাশতা বা দুপুরে খাবারের পর মৌসুমি ফল খেলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।

দুর্বল হার্ট সবল করার উপায়

বর্তমান বিশ্বে অনেক মানুষ বিভিন্ন করণে হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। তাদের মতই আপনার যদি এমটি হয়ে থাকে তাহলে দুর্বল হার্ট সবল করার প্রক্রিয়াগুলো একান্তই জেনে নেয়া প্রয়োজন।
হার্ট ভালো রাখার ব্যায়াম:
হার্ট সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত যথা সময়ে ব্যায়াম করুন, যেমন দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানো। আপনার শারীরিক অবস্থা উন্নত করার জন্য ব্যায়াম করার বিষয়ে সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করুন।

ধূমপান ত্যাগ করুন:
আপনি যদি ধূমপান করেন তাহলে আপনার হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও ধূমপান করার ফলে রক্তনালীর ক্ষতি করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা:
শরীরের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার ফলে ধীরে ধীরে হার্টের উপর চাপ সৃষ্টি করে। একটি সুষম খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন অর্জন এবং বজায় রাখা লক্ষ্য করুন। নিয়মিত ডায়েট অনুসরণ করুন। 
স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিদিনের খাবার টেবিলে ফল, সবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন (যেমন মাছ এবং হাঁস-মুরগি) এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন জলপাই তেল এবং অ্যাভোকাডোস) সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন। এছাড়াও ফ্যাট এবং লবণযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার সীমিত করুন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
উচ্চ রক্তচাপ হৃদপিন্ডে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কম-সোডিয়াম ডায়েট অনুসরণ করুন, মানসিক চাপ কমান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন। আপনার স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের দ্বারা নির্দেশিত ওষুধ সেবন করুন যাতে রক্তচাপ একটি স্বাস্থ্যকর পরিসরের মধ্যে থাকে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
এলডিএল কোলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা (“খারাপ” কোলেস্টেরল) হৃদরোগে অবদান রাখতে পারে। আপনার ডায়েটে সম্পৃক্ত এবং ট্রান্স ফ্যাট সীমিত করুন। আপনার হৃদরোগ স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ান এবং প্রয়োজনে পেশাদার ডাক্তার দ্বারা নির্ধারিত ওষুধ নির্বাচন করুন।

মানসিক চাপের কারণ:
দীর্ঘস্থায়ী চাপ হার্টের স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। মানসিক চাপ পরিচালনা করার স্বাস্থ্যকর উপায়গুলি খুঁজুন, যেমন শিথিলকরণ কৌশলগুলির মাধ্যমে, নিয়মিত ব্যায়াম, শখের সাথে জড়িত হওয়া এবং প্রয়োজনে প্রিয়জন বা পেশাদারদের কাছ থেকে সহায়তা চাওয়া।

পর্যাপ্ত ঘুম:
প্রতি রাতে সময়মত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। কম ঘুম হৃদরোগ সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য মূল কারণ হতে পারে।

কি খেলে হার্টের রোগ ভালো হয়

অনেকেই হার্টের রোগের লক্ষণ (Heart Disease Symptoms) ঠিক বুঝতে পারেন না। অসুখ অনেকটা এগিয়ে যাওয়ার পরই টের পাওয়া যায়। এই পরিস্থিতিতে হার্ট অ্যাটাকের প্রারম্ভিক লক্ষণ জানা জরুরি। তাই এবার থেকে সেই বিষয়টির দিকে রাখুন খেয়াল।

এই প্রসঙ্গে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স কলকাতার প্রধান পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদার বলেন, আপনাকে হার্টের সমস্যা দূর করতে গেলে কয়েকটি খাবার খেতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সবথেকে ভালো হয় কয়েকটি ফল খেতে পারলে। এই ৫ ফল হার্টের রোগ দূরে রাখতে পারে (Heart Healthy Fruits)।
আপেল হার্ট ভালো রাখে (Apple)
আপেল দারুণ এক খাবার। এই ফলে রয়েছে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, থিয়ামিন, নিয়াসিন, কোলেন ইত্যাদি। এছাড়াও ফাইবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তাই হার্টের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারে এই খাবার। 

পেয়েরা খেলেও হৃদরোগ দূরে থাকে (Guava)
এই ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি, বি৬। এছাড়া ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর থাকে এই খাবার। তাই প্রতিটি মানুষকে এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। কারণ এই সব গুণের কারণে পেয়ারা হৃদরোগ প্রতিহত করে। 

কলা খাওয়া হার্টের জন্য ভালো (Banana)
কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, বি৬ ও ফাইবার। এতে থাকা পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণ করে প্রেশার। এছাড়া দেখা গিয়েছে যে কলাতে থাকা ফাইবার শরীর থেকে কোলেস্টেরল বের করে দিতে পারে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখা খুবই দরকার। অন্যথায় সমস্যা বাড়ে।

কমলালেবু খাওয়া হার্টের জন্য উপকারী (Orange)
কমলালেবু এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। এই ফলে রয়েছে অনেকটা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিন্তু বহু সমস্যার করে দিতে পারে সমাধান। হার্টের অসুখও দূরে থাকে (Prevent Heart Disease)। 

ন্যাশপাতি খেলেও হার্ট সুস্থ থাকে (Pear)
এই ফলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। এছাড়া ভিটামিন ডি, সি, কে থাকে এই ফলে। আবার পটাশিয়াম থাকায় প্রেশার নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে ন্যাশপাতি। তাই এই ফলও ডায়েটে রাখা উচিত হৃদরোগ দূরে রাখতে চাইলে। এছাড়া স্ট্রবেরি ও অ্যাভোকাডো খেলেও হার্ট ভালো থাকে।

হার্ট বিট কমানোর উপায়

অতিরিক্ত উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ থেকে অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার বা উদ্বেগজনিত রোগ হতে পারে। অত্যধিক ভয় ও দুশ্চিন্তায় হার্টবিট বেড়ে যায়, বুক ধড়ফড় করে ও শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। উদ্বেগজনিত আক্রান্ত লোকেরা কেবল জীবনযুদ্ধেই পিছিয়ে যায় না, তাদের শরীরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে, অতিরিক্ত উদ্বেগ হার্টের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। একজন সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক হার্ট রেট প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বিটস। এই সীমা অতিক্রম করলে তা অস্বাভাবিক বা বিপজ্জনক হার্ট রেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত উদ্বেগ ও মানসিক চাপে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এটা সময় পরিক্রমায় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি ফাউন্ডেশনের একটি মেটা-অ্যানালাইসিসে পাওয়া গেছে, উদ্বেগে জর্জরিত লোকদের করোনারি আর্টারি ডিজিজের ঝুঁকি ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এটা হলো হার্টের সবচেয়ে প্রচলিত রোগ। কারেন্ট সাইকিয়াট্রি রিপোর্টসে প্রকাশিত রিভিউ থেকে জানা গেছে, উদ্বেগ ব্যাধি থেকে হার্ট ফেইলিউর ও রক্তনালীর রোগ হতে পারে।

উদ্বেগে আচ্ছন্ন লোকদের হার্ট রেট সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি বেশি। আপনার বুক ধড়ফড় করতে পারে, অপরিণত হৃদস্পন্দন অথবা অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদস্পন্দন হতে পারে।’ গবেষকরা জানান- স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হার্ট রেট কিছু লোকের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর, জ্ঞান হারানো ও হঠাৎ মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সীমাহীন অসঙ্গত আতঙ্কে প্যানিক অ্যাটাক হওয়ার সময় হার্ট রেট বেড়ে যায় এবং এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বুকে ব্যথা ও বুক ধড়ফড় করে। প্যানিক অ্যাটাকের সময় হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে মনে করে ভুল হতে পারে, কারণ উপসর্গগত মিল আছে।

হার্ট রেট বেড়ে গেলে তা কমানোর একটি কার্যকরী উপায় হলো- গভীর শ্বাসপ্রশ্বাস। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, গভীর শ্বাসক্রিয়ায় হার্ট রেট কমে এবং উদ্বেগও কমে যায়। গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য একটি নির্জন স্থানে বসে পড়ুন। অথবা শুয়ে পড়ুন। তারপর চোখ বন্ধ করুন। এবার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস টানুন। আপনি এই ধরনের শ্বাসক্রিয়ায় নতুন হলে বুকের ওপর একটি হাত রাখুন। এতে শ্বাসগ্রহণের সময় বুকের বৃদ্ধি টের পাবেন। অতঃপর মুখের মাধ্যমে ধীরেধীরে শ্বাস ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি প্রয়োজন অনুসারে রিপিট করুন।

শেষকথা

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম একটি কারণ। তাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ করা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করা, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড পরিহার করা, যথাসম্ভব দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপমুক্ত থাকা ইত্যাদি অভ্যাসের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করা সম্ভব। 
এ ছাড়া নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করানো, চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চলা এবং স্বাস্থ্যসচেতন হলে ঝুঁকি কমানো সম্ভব। হার্ট অ্যাটাক হলে একদিকে যেমন মৃত্যুঝুঁকি থাকে, অন্যদিকে চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। তাই হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধই সর্বোত্তম পন্থা।

বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪